বাংলাদেশ আগামী অর্থবছরের জন্য ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট পাস করেছে
বাংলাদেশ সংসদ রবিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (জুলাই ২০২৪-জুন ২০২৫) জন্য ৭.৯৭ ট্রিলিয়ন টাকা (৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) জাতীয় বাজেট পাস করেছে। এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বাজেট, যা উন্নয়ন কার্যক্রমের ব্যাপক প্রসার ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বার্ষিক বাজেট সংসদের সামনে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, “এ বাজেট দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে এবং বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
ভোটাধিকারী সদস্যদের কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতভাবে সংসদ বাজেটটি পাস করে যা কিছু সামঞ্জস্যের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ কর্মদিবসে সম্পন্ন হয়, রিপোর্ট করেছে শিনহুয়া সংবাদ সংস্থা। এই বাজেট পাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনার সময় ৬ জুন ৬.৫ শতাংশ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে মুদ্রাস্ফীতি হার ৬ শতাংশে সংশোধিত হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
বাংলাদেশ আগামী অর্থবছরে গড় মুদ্রাস্ফীতি হার ৬ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যদিও গত দুই বছরে এটি গড়ে ৯ শতাংশের বেশি ছিল। তবে, সরকার বার্ষিক বাজেটে ৬.৭৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন, এই বাজেটের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে।
ব্যয়ের দিকে, আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার হবে ২.৬৫ ট্রিলিয়ন টাকা, যার মধ্যে পরিবহন, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বড় অংশ বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া, স্বাস্থ্য, কৃষি, ও প্রযুক্তি খাতেও পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে যাতে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত হয়।
পরিবহন খাতে নতুন রাস্তা ও মহাসড়ক নির্মাণের পাশাপাশি রেলওয়ে উন্নয়ন এবং নদীপথের উন্নয়নেও বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যা দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।
অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন বন্দর, বিমানবন্দর এবং শিল্প এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্রামীণ উন্নয়নে কৃষি ও কৃষি নির্ভর শিল্পের প্রসার এবং গ্রামীণ এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
শিক্ষা খাতে নতুন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং শিক্ষা উপকরণ উন্নয়নের জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
এই বাজেটের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।