৪৮ বছর ধরে মানুষের পাশে চট্টগ্রামের আই ইনফার্মারি
দেশে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা বা অন্ধত্বের সমস্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে। দেশের মানুষের চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে, করছে। গত ৫০ বছরে চোখের সমস্যার ব্যাপারে জনসচেতনতা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে চিকিৎসার সুযোগ। এ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে চট্টগ্রাম আই ইনফার্মারি অ্যান্ড ট্রেনিং কমপ্লেক্স।
প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের হলেও এর কার্যক্রম শুধু চট্টগ্রাম জেলা বা চট্টগ্রাম বিভাগে সীমাবদ্ধ থাকেনি। প্রতিষ্ঠানের নেওয়া নানা উদ্যোগ ও প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে প্রায় সারা দেশের মানুষ। আস্থা আছে বলেই মানুষ প্রতিদিন এই প্রতিষ্ঠানে ভিড় জমায়। দেশের সরকারি-বেসরকারি চক্ষু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। বিদেশেও চট্টগ্রামের এই প্রতিষ্ঠানের সুখ্যাতি আছে। প্রতিষ্ঠানটি একদিনে আজকের এই অবস্থানে আসেনি। একের পর এক হাতে নেওয়া নানা উদ্যোগ, দেশি-বিদেশি নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাহায্য-সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি বড় হয়েছে। তবে একক ব্যক্তি হিসেবে অধ্যাপক রবিউল হোসেনের অবদান অনেক বেশি। তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এখন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ট্রাস্টি।
১৯ ডিসেম্বর সকালে চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলি এলাকায় প্রতিষ্ঠানের হাসপাতালে গিয়ে মানুষের ভিড় চোখে পড়ে। চট্টগ্রাম শহর ছাড়াও আশপাশের এবং দূরের জেলার মানুষ এসেছে চোখের নানা সমস্যা নিয়ে। ভিড় ঠেলে সামনে এগোনো ছিল কঠিন।
অধ্যাপক রবিউল হোসেনের চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি চক্ষুবিজ্ঞানে, বিলেত থেকে। দেশের মানুষের চোখের সমস্যার কথা মাথায় রেখে সরকারি চাকরি ছেড়ে স্বাধীনভাবে সেবার কাজে উদ্যোগী হন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাজ শুরু করি ১৯৭৩ সালে, শহরের আন্দরকিল্লার একটি পরিত্যক্ত ভবনে। ৪০ শয্যার চোখের হাসপাতাল চালু করি। সেখান থেকেই আউটরিচ কর্মসূচিও শুরু হয়। মূলধন ছিল ৩ হাজার ৬০০ টাকা। মনের জোরে কাজ শুরু করেছিলাম।’
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে সরকারের পাশাপাশি অনেক এনজিও ভূমিকা রেখেছিল। রবিউল হোসেন জানান, কারিতাস বাংলাদেশ ওই সময় পাশে দাঁড়িয়ে চক্ষুসেবার কাজে সহায়তা করেছে। এ ছাড়া এক জার্মান দম্পতি আর্থিক সাহায্য ছাড়াও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্পর্ক গড়ে তোলার কাজে সহায়তা করেছিল। এ রকম উদাহরণ আরও আছে।